, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


প্রমাণ দিতে পারলে শাস্তি মেনে নেব: সাবেক সেনাপ্রধান 

  • আপলোড সময় : ২১-০৫-২০২৪ ০২:৩০:১০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২১-০৫-২০২৪ ০২:৩০:১০ অপরাহ্ন
প্রমাণ দিতে পারলে শাস্তি মেনে নেব: সাবেক সেনাপ্রধান 
এবার দুর্নীতির দায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর মুখ খুলেছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ। তিনি বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক এবং সেনাবাহিনীর প্রধান থাকাকালীন তার ভাইয়েরা বা নিকটাত্মীয় কেউ এসব প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারি করেছে তার তথ্য প্রমাণ দিতে পারলে সব মেনে নেবেন।

তিনি দাবি করেন, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়া তো অভিযোগ প্রমাণিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র কীসের ভিত্তিতে কোন অভিযোগের ওপর ভিত্তিতে আমার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা বিরুদ্ধে আইনি বা অন্য কোনো প্রক্রিয়া না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক প্রক্রিয়ায় এসব তথ্য জানান সাবেক এই সেনাপ্রধান। আজিজ আহমেদ বলেন, আমি বিজিবির মহাপরিচালক এবং সেনাপ্রধান থাকাকালীন আমার কোনো ভাই বা নিকটাত্মীয় এই দুই প্রতিষ্ঠানের কোথাও ঠিকাদারি করেছে তার তথ্য প্রমাণ দিতে পারলে আমি সব মেনে নেব। শুধু তাই নয়, এই প্রতিষ্ঠান দুটিতে তাদের কোনো লাইসেন্স ছিল সেটার প্রমাণ দিতে পারলেও আমি সব শাস্তি মেনে নেব।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কোন আইনি প্রক্রিয়া বা প্রতিবাদ জানাবেন কী না, জানতে চাইলে সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, আমি মনে করি এগুলো সত্য নয়। তাই এর প্রতিবাদ জানানোর প্রয়োজন মনে করছি না। তিনিসহ তার পরিবারের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে, কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস ম্যান’ নামক একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল। তার সঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞা সম্পৃক্ত ওতপ্রোতভাবে। অভিযোগ দুইটা একই, কিন্তু এখানে বিস্তারিত বলা হয়নি।

প্রথম অভিযোগ হলো- আমি আমার ভাইকে বাংলাদেশের যে আইন আছে, তার (ভাই) অপরাধ কর্মকাণ্ড থেকে সে যেন এড়িয়ে চলতে পারে; সেজন্য আমি আমার পদ-পদবি ব্যবহার করে তাকে সহযোগিতা করে আমি করাপশন করেছি। এর উত্তর হলো- আমার সেই ভাই আমি জেনারেল হওয়ার অনেক আগেই বিদেশে গেছে। সে নিশ্চয়ই বৈধ পাসপোর্ট নিয়েই বিদেশে গেছে। তার চলে যাওয়া বা দেশের প্রচলিত আইন ফাঁকি দেওয়ার ব্যাপারে আমি আমার পদ-পদবি ব্যবহার করেছি -এই অভিযোগটা আমি মেনে নিচ্ছি না। মেনে নিতে পারি না, এটা সঠিক নয়।

তিনি বলেন, আমাকে যে দুই কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার কী কোনো ভিত্তি আছে? তারা বলেছে, আমি আমার পদ-পদবি দিয়ে আমার ভাইকে নাকি সহযোগিতা করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি যে শাস্তি পেতে হবে। তারা আমার বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ তুলেছে তার কোনো প্রমাণ থাকলে আমাকে দিক।

সোমবার বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। দুর্নীতির সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িত থাকার দায়ে তার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জেনারেল আজিজ আহমেদের পরিবারের সদস্যদেরও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণা করার কথা জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজিজ আহমেদ তার ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য জবাবদিহিতা এড়াতে সাহায্য করেছেন। আর এটা করতে গিয়ে তিনি সরকারি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত হয়েছেন। এছাড়া অন্যায়ভাবে সামরিক খাতে কন্ট্রাক্ট পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য তিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। একইসঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য সরকারি নিয়োগের বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বিবৃতিতে আরও বলেছেন, দুর্নীতিতে উল্লেখযোগ্য সম্পৃক্ততার কারণে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। তার (জেনারেল আজিজ) কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ন করতে ভূমিকা রেখেছে।
সর্বশেষ সংবাদ